জান্নাতুল যূথী
লেখক যেখানে বাদী বা বিবাদীর ভূমিকায়, গবেষক সেখানে বিচারকের আসনে। জান্নাতুল যূথীও তেমনই একজন নির্মোহ-নিরপেক্ষ-বস্তুনিষ্ঠ গবেষক। তিনি জানেন, বাদী-বিবাদীরূপী লেখকের সাহিত্যকর্মের দোষ-গুণ নির্মোহভাবে আলােচনা করা সমালােচকের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। এক্ষেত্রে নিছক সমালােচক যিনি, তিনি আদর্শ বিচারকের মতােই কাজ করেন। বিচারক যেমন অপরাধীকে শাস্তি দিলেও তার প্রতি সংবেদনশীল থাকেন, তেমনি সমালােচকও কবি-কথাশিল্পীর ছােটখাটো ভুল নিয়ে কঠোর সমালােচনা করেন না। বরং ভালাে দিক নিয়ে সপ্রশংস আলােচনা করে পাঠককে মূল সাহিত্যকর্ম পাঠে আগ্রহী করে তােলেন। তবে, গবেষকের এতটা স্বাধীনতা নেই। তাকে প্রকৃত তথ্যই হাজির করতে হয়। নাহলে তার নিরপেক্ষত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই গবেষককে নির্মোহ থাকতে হয়। জান্নাতুল যূথী সেই শর্ত মেনেই গবেষণাকর্ম চালিয়েছেন। তিনি এই গবেষণাগ্রন্থে তুলে ধরেছেন, বাংলা ছােটগল্পের উন্মেষ, রবীন্দ্রনাথের ভূমিকা ও অবস্থান। আর বিষয় হিসেবে রবীন্দ্রগল্পে নিম্নবর্গ, মনস্তত্ত্ব, মানুষ ও প্রকৃতি, নারী-ভাবনা এবং গ্রামীণ ও নগর জীবনের গবেষণা করেছেন। বর্তমান গ্রন্থটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বাংলা সাহিত্যের মননশীল পাঠক, প্রত্যেকের কাজে লাগবে। এটি হয়ে উঠবে অনিবার্য সহায়গ্রন্থ।