উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জন্ম ১৯০২ সালের ১২ই অক্টোবর। সেই দিনটি ছিল বিজয়া দশমী। সেই কারণেই নাম হল বিজু। পোশাকী নাম উমাপ্রসাদ, যেহেতু দেবী দুর্গা ফিরে যাবার দিন আশুতোষজায়া যোগমায়া দেবীর কোলে এই ফুটফুটে সুশ্রী শিশুটি উপহার দিয়ে গেলেন। খেলাধুলো শরীরচর্চা বিদ্যাচর্চার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর অনুরাগের পরিচয় পাওয়া গেছে। চিত্রাঙ্কন, ফোটোগ্রাফি, সঙ্গীত এই সবেতেই তার ঝোঁক ছিল। শরৎচন্দ্রের সঙ্গে একান্ত অন্তরঙ্গতা ছিল। ‘বঙ্গবাণী' পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাংলার অনেক সাহিত্যিকদের সঙ্গে এই সূত্রে পরিচয় হয়। আইনজীবীর পেশা গ্রহণ করেন এবং আইন কলেজে অধ্যাপনা করেন। তবে এই সব পরিচয়ের উর্দ্ধে আছে ভ্রামনিকের জীবন। ১৯২৮ সালে মাকে নিয়ে যান কেদার-বদরী দর্শনে। তখন হৃষীকেশ থেকে হাঁটাপথ। যাতায়াতে প্রায় ৪০০ মাইল। ১৯৩৪ সালে গেলেন উমাপ্রসাদ কৈলাস ও মানস সরোবরে। প্রচারবিমুখ উমাপ্রসাদ সাহিত্যজীবন শুরু করেন অনেক পরে। খবরের কাগজ পড়া ছেড়েছিলেন মেজদা শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যুর কিছুদিন পর থেকেই। তারপর থেকে হিমালয় ও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে কত যে ভ্রমণ করেছেন তার ইয়ত্তা নেই। প্রধানত প্রখ্যাত আইনজীবী অতুলচন্দ্র গুপ্ত মহাশয়ের পীড়াপীড়িতেই তার প্রথম ভ্রমণকাহিনী গঙ্গাবতরণ প্রকাশিত হয়। তার পর একে একে আরও পনেরোটি গ্রন্থ। মণিমহেশ গ্রন্থের জন্য তিনি পেয়েছেন সাহিত্য আকাদেমি’ পুরস্কার। ১৯৮৮ সালে শরৎ পুরস্কারে’ সম্মানিত হন। এছাড়া পেয়েছেন বঙ্কিমচন্দ্র স্বর্ণপদক’ ও ‘দ্বিজেন্দ্রলাল রায় পুরস্কার। উমা প্রসাদের তিরোধান দিবসটিও বড় আশ্চর্যের। ১৯৯৭ সালের ১২ই অক্টোবর, সেদিনও ছিল বিজয়া দশমী।