ড. সা’দত হুসাইন
(২৪ নভেম্বর ১৯৪৬ - ২২ এপ্রিল ২০২০) ছিলেন একজন বাংলাদেশী আমলা এবং দেশের অন্যতম প্রধান সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান 'বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন'-এর নবম চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রধান তথা বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীপরিষদ সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সা’দত হুসাইন একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ এর প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারে তিনি কাজ করেছিলেন। চাকুরী জীবনে তিনি সততা, কর্মদক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। তিনি ছিলেন নিয়মানুবর্তী ও নীতিপরায়ণ। শিক্ষাজীবন শেষে পাকিস্তান আমলে ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে (সিএসপি) যোগ দেন। ১৯৭১ তিনি নড়াইলে শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। তিনি এপ্রিল মাসে ভারত গমন করেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে তাঁর গ্রন্থ “মুক্তিযুদ্ধের দিন-দিনান্ত’’ মাওলা ব্রাদার্স কর্তৃক ২০১২ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি ২০০২-২০০৫ মেয়াদে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস থেকে যথারীতি অবসর গ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে তিনি বাংলাদেশ পাবলিক কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্তি লাভ করেন এবং ২০১১ পর্যন্ত এ পদের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকুরি করেছেন। চাকুরি জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী সা'দত হুসেন ছিলেন বাংলাদেশের সরকারি চাকুরির জন্য নিয়োগ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ 'বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন'-এর নবম চেয়ারম্যান; প্রফেসর ড. জিনাতুন নেসা তাহমিনা বেগমের অবসর গ্রহণের পর ২০০৭ সালের ৯ মে তারিখে তিনি চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। অবসর জীবনে তিনি লেখালেখি করেছেন। তার লেখা কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো "ছেঁড়া কথার উড়াল ফানুস", "নীচু স্বরে উঁচু কথা", "স্মৃতি-প্রীতির সজীব পাতা", "রুক্ষ সূক্ষ হীর মুক্তো"। এছাড়া তিনি একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন।