ভাই গিরিশচন্দ্র সেন
গিরিশ চন্দ্র সেন (জন্ম: ১৮৩৪ - মৃত্যু: ১৫ আগস্ট ১৯১০)ছিলেন একজন বাঙালি ধর্মবেত্তা,অনুবাদক ও বহুভাষীক। ভাই গিরিশচন্দ্র সেন নামেই তিনি বেশি পরিচিতি পেয়েছেন এবং 'মৌলভী'[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] উপাধিও পেয়েছেন। বাংলা ভাষাভাষী জনসাধারনের নিকট প্রথম বাংলা ভাষায় পুর্নাঙ্গ কুরআন প্রকাশের কৃতিত্ব তাকে দেয়া হয়। তিনি আরবি, ফার্সি, উর্দু এবং ইসলামী বিষয়াবলী সমন্ধেও পাণ্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। নরসিংদী জেলার পাঁচদোনা গ্রামে তার জন্ম। পেশাগত জীবনের প্রথম পর্যায়ে তিনি ময়মনসিংহের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাচারিতে নকলনবিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে স্বল্প সময়ের জন্য ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে শিক্ষকতা করে সাংবাদিকতা ও সাহিত্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। প্রথম পর্যায়ে তিনি ঢাকা প্রকাশে কাজ করেন এবং এতে তার লেখা প্রকাশিত হয়। পরে তিনি সুলভ সমাচার ও বঙ্গবন্ধু পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক এবং মাসিক মহিলা (১৩০২) পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ফারসি ও সংস্কৃত ভাষা শিক্ষা করেন। কেশবচন্দ্র সেন ও বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর প্রভাবে ১৮৭১ সালে তিনি ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন এবং প্রচারব্রত গ্রহণ করে উত্তর ভারত, দক্ষিণ ভারত ও ব্রহ্মদেশ ভ্রমণ করেন। গুরু কেশবচন্দ্র সেনের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় তিনি ইসলামি সাহিত্য-সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। এ উপলক্ষে আরবি ভাষা ও ইসলামিক ধর্মশাস্ত্র চর্চার জন্য তিনি ১৮৭৬ সালে লক্ষ্ণৌ গমন করেন। ধর্ম সম্পর্কে জানার আগ্রহ, চারিত্রিক উদারতা এবং সত্যবাদিতার জন্য গিরিশচন্দ্র ব্রাহ্ম-হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করেন। এক কথায় তিনি ছিলেন সর্বধর্মসমন্বয়ের প্রতীক। তাই সকলের নিকট তিনি ‘ভাই গিরিশচন্দ্র’ নামে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি তার প্রকাশনী হতে কোরান শরীফের বঙ্গানুবাদ প্রকাশ করেন।