Skip to Content
Filters

author.name

আবদুশ শাকুর

আবদুশ শাকুর (জন্ম: ২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪১ - মৃত্যু: ১৫ জানুয়ারি, ২০১৩) বাংলাদেশের একজন প্রতিষ্ঠিত কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, রচনাসাহিত্যিক, রবীন্দ্র-গবেষক, সঙ্গীতজ্ঞ ও গোলাপ-বিশেষজ্ঞ। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৪ সালে তিনি পেয়েছেন একুশে পদক। তিনি রম্যচনার জন্য বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। আবদুশ শাকুরের পাঁচশতাধিক পৃষ্ঠার ‘গল্পসমগ্র’ গ্রন্থটি কীর্তি হিসেবে বাংলা কথাসাহিত্যের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী হবার উপাদানে সমৃদ্ধ। তার পাঁচশতাধিক পৃষ্ঠার ‘রম্যসমগ্র’ ব্যাখ্যা করে কেন রম্যরচনার ক্ষেত্রে তিনি দেশের অগ্রগণ্য লেখক হিসেবে বরিত। তার গোলাপ-বিষয়ক গবেষণামূলক রচনাসমূহ বিশেষত ‘গোলাপসংগ্রহ’ গ্রন্থটি স্বক্ষেত্রে বাংলাভাষায় একক। শুধু পুষ্পরানী সম্পর্কেই নয়, পুস্তকটিতে রয়েছে মৌসুমী, বর্ষজীবী, দ্বিবর্ষজীবী, চিরজীবী পুষ্পবিষয়ক বিবিধ আলোচনাসহ বাংলাদেশের জাতীয় ফুল ও জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের উপর সারগর্ভ পর্যালোচনাও। গবেষণামূলক সঙ্গীতলেখক হিসেবে দেশের সঙ্গীত ও সাহিত্যিক সমাজে তিনি অগ্রগণ্য। শুদ্ধসঙ্গীতের স্বর, সুর, কথা, হিন্দুস্তানীসঙ্গীত বনাম কর্ণাটকসঙ্গীত, ধ্বনিমুদ্রণ প্রযুক্তি, ধ্বনিসংস্কৃতি বনাম লিপিসংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে গভীরচারী আলোচনার জন্য তার ‘সঙ্গীত সঙ্গীত’, রাগসঙ্গীতচর্চার সোনালী শতক সম্পর্কিত ‘মহান শ্রোতা’ এবং সার্ধশত বর্ষের দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পর্যালোচনা গ্রন্থ ‘বাঙালির মুক্তির গান’ বিশেষজ্ঞমহলে সমাদৃত। তার ‘মহামহিম রবীন্দ্রনাথ’, ‘পরম্পরাহীন রবীন্দ্রনাথ’ এবং ‘রবীন্দ্রনাথকে যতটুকু জানি’-নামক রবীন্দ্র-গবেষণামূলক গ্রন্থগুলি বোদ্ধা মহলে কবিগুরুর শেষহীন গুরুত্ব অণুধাবনে বিশেষ সহায়ক বলে বিবেচিত। চ. তার উপন্যাসগুলি ভাষা ও উপজীব্যের দিক দিয়ে অভিনব বলেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণ : ‘ক্রাইসিস’, ‘সংলাপ’, ‘উত্তর-দক্ষিণ সংলাপ’ ও `ভালোবাসা'। ছ. মুখের ভাষার মতো তাঁর গদ্যও বুদ্ধিদীপ্ত, ক্ষিপ্র, কাব্যময়, রঙিন ও ক্ষুরধার। গদ্যশরীর যতখানি নিখাদ আর শাণিত হতে পারে, তাঁর ভাষা প্রায় তারই উপমা। বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ-এর ভাষায়, ‘আজ আমাদের চারপাশে অযত্ন আর অবহেলায় লেখা শিথিল গদ্যভাষার যে “অলীক কুনাট্যরঙ্গ” মাথা উঁচিয়ে উঠেছে। আবদুশ শাকুরের গদ্য চিরায়ত গদ্যের পক্ষ থেকে তার শক্তিমান প্রতিবাদ…জ্ঞান, মেধা এবং মননের সমবায় তার বৈদগ্ধ্যকে এমন এক পরিশীলিত শ্রী এবং উপভোগ্যতা দিয়েছে যার কাছাঁকাছি জিনিশ চিরায়ত বাংলাসাহিত্যের ভিতরেই কেবল খুঁজে পাওয়া যাবে’ (স্বনির্বাচিত প্রবন্ধ ও রচনা ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আবদুশ শাকুরকে সমাহিত করা হয়