আল আজাদ
আল আজাদ জন্য ১৩৪৫ সনের ১৫ চৈত্র বিক্রমপুরের (বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলা) লৌহজং উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী পাটুলী গ্রামে। পিতা : মরহুম ইবাদত খান, মাতা : মরহুমা সবুরুন্নেসা খাতুন। পদ্মা বিধৌত পাটুলী গ্রামে তার স্বপ্নময় শৈশব কাটে। শৈশবকালে প্রাকৃতিক মনােরম পরিবেশ তার মনে প্রভাব বিস্তার করে। নদী তীরবর্তী কাশবন, হােগলার ধাম, ঝাউবন ও ধান-পাট ক্ষেতের ওপর দিয়ে বইয়ে যাওয়া মৃদুমন্দ বাতাস তার মনকে আন্দোলিত করত। বিশাল পদ্মার বুক চিরে ঢেউ ভেঙে ভেসে যাওয়া স্টিমার এবং রঙিন পালতােলা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন তরী তার দৃষ্টি কেড়ে নিতাে। পাটুলী গ্রামে পাঠশালা জীবন শেষ হলে পরে বাবার ব্যবসায়ী কর্মক্ষেত্র নেত্রকোণায় চলে আসতে হয় সপরিবারে । চিরচেনা পরিবেশ থেকে নতুন আবাসস্থলে চলে আসায় মনটা কিছুটা ভারাক্রান্ত হলেও নতুন বন্ধুদের সাহচর্যে এ সমস্যার অস্তিত্ব দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। নেত্রকোণায় এসে আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ছাত্রজীবন শুরু করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি চাপা স্বভাব ও ভাবুক প্রকৃতির ছিলেন। বইপড়া, ছবি আঁকা, খেলাধূলা, শিশু সংগঠন, বাম রাজনীতি আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়ােজিত রাখতে বেশি পছন্দ করতেন কবি। কৈশােরকাল থেকেই লেখালেখির প্রতি ছিল তার প্রবল ঝোক। পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে তার লেখা কবিতা প্রথম প্রকাশিত হয় তখনকার প্রথম শ্রেণীর দৈনিক আজাদ-এর কিশাের বিভাগ “মুকুলের মহফিলে' । বিদ্যালয়ের পাঠ্য বইয়ে প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমউদ্দীন, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, যতীন্দ্র মােহন বাগচী, বেগম সুফিয়া কামাল, কুসুম কুমারী দাশ, সুনির্মল বসু প্রমুখ কবির লেখা পড়ে তিনি লেখালেখির প্রেরণা পান। তার কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ জীবন্তিকা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে। কবিতা লেখার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতায়ও নিয়ােজিত। সাপ্তাহিক নও বেলাল’ পত্রিকার মাধ্যমে তার সাংবাদিকতার হাতেখড়ি। পরে দৈনিক সংবাদ, দৈনিক পাকিস্তান রূপান্তরে দৈনিক বাংলা, দৈনিক মাতৃভূমি পত্রিকায় তিনি সাংবাদিক ছিলেন। বর্তমানে তিনি দৈনিক ঢাকা’-এর সাথে সংশ্লিষ্ট ।