এলাহী নেওয়াজ খান
এলাহী নেওয়জ খান বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের একটি বিশিষ্ট নাম। তিনি একাধারে সাংবাদিক, লেখক, গবেষক, কলামিস্ট ও শীর্ষস্থানীয় সংবাদিক নেতা। সাংবাদিকতা পেশার মান সমুন্নত রাখতে তিনি ব্যাপক অবদান রেখেছেন, যা সাংবাদিকরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে থাকেন। তিনি ২০০২-২০০৬ সময়কালে ঐতিহ্যবাহী ও মর্যাদাশীল ‘ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’-এর পরপর দু’বারের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। চার দশকের অধিক সাংবাদিকতা জীবনে জনাব এলাহী নেওয়াজ খান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ অবলােকন করেছেন গভীরভাবে। শধু তাই নয় একজন রাজনৈতিক প্রতিবেদক হিসাবে ভিতর ও বাইরে থেকে রাষ্ট্রকে খুব ভালােভাবে দেখার সুযােগ লাভ করেছেন। দেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, বরেণ্য সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবিদের সংস্পর্শ লাভ করেছেন খুব ঘনিষ্ঠভাবে। সুদীর্ঘ সাংবাদিক জীবনে জনাব খান বহু দৈনিক পত্রিকা, সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে কাজ করেছেন। এক সময় বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়। ম্যাগাজিন সাপ্তাহিক বিচিত্রায়’ প্রদায়ক হিসাবেও কাজ করেছেন। ৮০-এর দশকে ‘সাপ্তাহিক বিচিত্রা’য় তার কয়েকটি প্রচ্ছদ কাহিনী পাঠক মহলে। ব্যাপক আলােড়ন সৃষ্টি করেছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল-‘স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব’, ‘নীতি ও দল বদলের রাজনীতি’, ‘শিল্প-সাহিত্য সম্পর্কে রাজনীতিবিদদের ভাবনা' ইত্যাদি। তিনি দৈনিক দেশ, আল মুজাদ্দেদ, দিনকাল, দেশ জনতা, ইনকিলাবসহ অনেক দৈনিক ও ম্যাগাজিনে কাজ করেছেন। তাঁর লেখাগুলাে নিয়ে যে সব গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, এরশাদের উত্থান-পতন’, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি পর্ব’, ‘শিল্প-সাহিত্য সম্পর্কে রাজনীতিবিদের ভাবনা ইত্যাদি। প্রথম দিকে জনাব এলাহী নেওয়াজ খান রাজনৈতিক ও সাংবাদিক মহলে বামপন্থী হিসাবে পরিচিত হলেও পরবর্তী সময়ে সুফিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর একনিষ্ঠ অনুসারীও তিনি। আর সে কারণেই তিনি মওলানা ভাসানীর আধ্যাত্মিক জীবন নিয়ে লিখতে উদ্বুদ্ধ হন। কারণ মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক জীবন ও কর্ম নিয়ে অনেক গ্রন্থ রচিত হলেও তার আধ্যাত্মিক জীবন নিয়ে তেমন কোনাে লেখালেখি হয়নি। অথচ লাখ লাখ মানুষ এই মহান নেতাকে একজন উঁচু স্তরের সুফি সাধক হিসাবে চেনেন।