হৃদয় খান
হৃদয় খান লেখায় এক পৃথিবী মায়া! | তার শব্দের বুনন, বাক্যের গভীরতা দেখে টের পাওয়া যায় একজন পরিণত শব্দচাষী সে। চারপাশটাকে অন্য চোখে দেখার, বােঝার এই দারুণ ক্ষমতা কীভাবে পেলেন লেখক? জন্ম তার যশােরের। ছােট্ট একটি গ্রামে। আজকের এই শব্দচাষী সত্যিকারের চাষী হয়ে একসময়ে মাঠে বুনেছিলেন। ফসল। মাটি আর মানুষের সাথে সেকি দারুণ সখ্যতা! পড়াশােনার খুব শখ থাকলেও সংসারের অভাবের কারণে সেটা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। বাবা ধার্মিক মানুষ। সংসার গােছাতে গােছাতে হিমশিম খেয়ে অবশেষে উদাসীন হয়েছেন একটা সময়ে। অনেক, অনেক দায়িত্ব নিয়ে আসা লেখক নিজের দিকে তাকানাের সময় পায়নি কখনাে। পরিবারের মানুষগুলাে নিয়ে ছুটতে ছুটতেই কেটেছে এতােটা জীবন। অভাবের বাড়াবাড়িতে দেশের বাইরে গিয়ে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। একাকীত্ব, দারিদ্রতা নিয়ে লড়াই করতে করতে ব্যস্ত লেখক সংগ্রামের ভেতরেও লেখার টেবিলে বসেছেন। নিয়মিত। লেখা নয়, মায়ার চোখে মানুষকে দেখতে দেখতে, তাদের গল্পগুলাে জেনে সেই গল্প রং আর। তুলি দিয়ে যেনাে এঁকেছেন ডায়রির পাতায় পাতায়। যে মানুষ দুঃখকে এতাে কাছ থেকে চেনে দুঃখগাথার গল্প তার চেয়ে আর ভালাে কেউ বলতে পারবে না যে! বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে তার জানাশােনা অনেক। বাইরের বই পড়তে পড়তে নিজেকে করেছেন সমৃদ্ধ। প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘পােড়া বাশির সুর দিয়েই দৃষ্টি কেড়েছেন পাঠকদের। প্রথম বইটির পর ভালােবেসে পাঠকরা কাছে নেওয়ায় সাহস পেয়েছেন ‘অনাথ’ নামের একটি দীর্ঘ উপন্যাস প্রকাশে। তারপর প্রকাশ পায় দীর্ঘশ্বাস’ নামে আরাে একটি উপন্যাস। পাঠকদের এক মায়াময় যাত্রায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই লেখক। তার প্রস্তুতি, লড়াই দেখে মনে হয় সাহিত্যের ভুবনে সে চলে যাবার জন্য নয়, বরং পরিণত হয়ে থাকার জন্য এসেছে।