প্রমাণতত্ত্ব

ভারতীয় দর্শনপ্রস্থানসমূহের মধ্যে প্রমাণতত্ত্বের আলোচনায় ন্যায়দর্শনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। গৌতমীয় ন্যায়সূত্র এই প্রস্থানের আদিগ্রন্থ। ক্রমে বাৎস্যায়ন, উদ্দ্যোতকর ও বাচস্পতি মিশ্র তাঁদের নিজস্ব অবদানে এই প্রস্থানকে সমৃদ্ধতর করেছেন। পরবর্তীতে এঁদের উত্তরসূরীরূপে উদয়নাচার্য প্রসিদ্ধ । বস্তুতঃ প্রাচীন ও নব্যন্যায়ের সন্ধিক্ষণে তাঁর আবির্ভাব। এই বইতে প্রমাণতত্ত্ব আলোচিত হয়েছে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির সাপেক্ষে। যে কোনো ভারতীয় দর্শনপ্রস্থান যখন কোনো একটি তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে, তখন অবশ্যই বিষয়টিকে প্রমাণগ্রাহ্য হতে হয়েছে। প্রাচীনতম ভারতীয় দর্শন সাংখ্যের প্রমাণগ্রন্থ সাংখ্যকারিকায় উক্ত হয়েছে—“প্রমেয়সিদ্ধিঃ প্রমাণাদ্ হি’। অর্থাৎ প্রমেয়তত্ত্বের জ্ঞান প্রমাণতত্ত্ব থেকেই ঘটে থাকে। ফলতঃ দর্শনশাস্ত্রে প্রমাণতত্ত্বের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। প্রকৃতপক্ষে যে কোনো দার্শনিক তত্ত্বই প্রমাণতত্ত্বকে অবলম্বন করে সৃষ্ট হয়। বিষয়টি প্রামাণ্য না হলে তা দর্শনের আলোচনার পরিসরে অন্তর্ভুক্তি হতে পারে না। সেকারণেই প্রমাণতত্ত্বের এই আলোচনার পরিসরে প্রাথমিকভাবে আলোচিত হয়েছে প্রমার যথার্থ লক্ষণ বিচার এবং পরবর্তীতে আলোচনার বিষয় হয়েছে প্রামাণ্যবাদ। ভারতীয় দর্শনপাঠে আগ্রহী ও অনুরাগী পাঠকের কাছে এ বই তাই অপরিহার্য।