আর্দশ হিন্দু হোটেল (দেজ)

মে. ১৯৩৫ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৩৬-এর মধ্যে লেখা বিভূতিভূষণের দিনলিপি উর্মিমুখর’-এর এক জায়গায় তিনি হাজারী । পরটা' নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর পরিচয়ের কথা উল্লেখ করেছেন, যিনি ভটচাৰ্য্যি বামুন। হওয়া সত্ত্বেও কেবলমাত্র পাঁচ সের ওজনের একখানা খাস্তা পরটা তৈরি করার মুন্সিয়ানার। সুবাদে ‘পরটা’ উপাধি পেয়েছিলেন। এই ‘হাজারী পরটা’-ই বছরচারেক পরে, ১৯৪০ সালে প্রকাশিত বিভূতিভূষণের ৬ষ্ঠ উপন্যাস। ‘আদর্শ হিন্দু হােটেল’-এ হাজারি ঠাকুর-রূপে আত্মপ্রকাশ করেছেন—এমন অনুমান। অসংগত নয়। সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থান যার যা-ই হােক-না-কেন কোনাে মানুষকেই তার স্বপ্ন দেখার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না আপাতদৃষ্টিতে সেই স্বপ্ন যতই । অসম্ভব-অস্বাভাবিক বলে মনে হােক না। কেন। স্টেশন চত্বরের এক সামান্য হােটেলের রাঁধুনি হয়েও হাজারি ঠাকুর নিজে হােটেলমালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। এবং সততা ও অধ্যবসায়ের জোরে শত লাঞ্ছনাবঞ্চনা-অবিচার-অবহেলার কণ্টকাকেীর্ণ পথ পেরিয়ে সে স্বপ্ন তিনি সফল করেছিলেন। বিভূতিভূষণের রচনার যা মূল প্রস্থানবিন্দু, ‘মাটির মানুষের সেই অপরাজেয় মনুষ্যত্বের বিজয়বৈজয়ন্তীরই অপর নাম ‘আদর্শ হিন্দু হােটেল’-এর হাজারি ঠাকুর। যে উপন্যাস পাঠ করে সজনীকান্ত দাস শনিবারের চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘সক্ষমের হাতে পড়িলে অতি অকিঞ্চিৎকরও কিরূপ। মহিমান্বিত হইতে পারে, তা প্রত্যক্ষ করিয়া পুলকিত হইয়াছি।