ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির এক বিরাট অহংকারের নাম। মাতৃভাষার মর্যাদা আর মানুষের অধিকার আদায়ের যে লড়াই বাঙালি করেছে, সেই সংগ্রামের স্বীকৃতি এই। একুশ। এই আন্দোলনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস আছে। আছে প্রাতিস্বিকতা রক্ষার। ঐতিহ্য। ভাষা থেকে ভূখণ্ড- এই হলাে একুশে ফেব্রুয়ারির মূল প্রত্যয় ও প্রাপ্তির জায়গা। একুশের চেতনাই কালের পরিক্রমায় বাঙালিকে স্বাধিকারচিন্তায় উদ্বুদ্ধ করেছে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাও এক অর্থে একুশ। আর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়তাে আমাদের জাতীয়তাবাদী ধারণার এক সুদৃঢ় স্তম্ভ। ২১ আর ৭১-এর শেকড় থেকে বৃক্ষ ও ডালপালা ছড়িয়ে পড়েছে বাঙালির সাহিত্য-সাধনার উঠানে। বাংলাদেশ’ নামক যে স্বাধীন রাষ্ট্রভূমি আমাদের বিচরণক্ষেত্র, তার। সৃষ্টির পথ ও পরিক্রমা যে অবশ্যই আমাদেরকে জানতে হবে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তা ছড়িয়ে দিতে হবেএটাতাে সরল কথা। কিন্তু এই কাজটি করা যায় কীভাবে? পঠন-পাঠন হতে পারে জাতীয় চেতনা ধারণ ও বিস্তারের একটি উত্তম মাধ্যম। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের। সাহিত্য বিষয়ক বাংলা সাহিত্যের নির্বাচিত রচনার পাঠ ও পর্যালােচনা এই পঠন-প্রক্রিয়ায় সামান্য সহায়কের ভূমিকা পালন করতে পারে। মূল রচনা পাঠের সাথে সমালােচনা বা পর্যালােচনা মিলিয়ে পড়লে পাঠকের জ্ঞানের পরিধি। যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই তার চিন্তার পরিসরে যুক্ত হবে। নতুন নতুন বােধ ও তাড়না।। বর্তমান সংকলন-গ্রন্থে ভাষা আন্দোলন আর মহান মুক্তিযুদ্ধ। নির্ভর বাংলা সাহিত্যের সৃজন ও মননের ছায়া ও ছবি। তুলে ধরবার চেষ্টা আছে। যাদের রচনা বিষয়ে এবং যাদের প্রবন্ধ-নিবন্ধ এখানে সংকলিত হলাে, তাঁদের সবার কাছে আমাদের অসীম কৃতজ্ঞতা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ‘ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য কোর্সটি পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত হলেও এই বিষয়ে পর্যালােচনাগ্রন্থ প্রায় দুষ্প্রাপ্য। কলেজ পর্যায়ের। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাঠে সহায়তার জন্য আমাদের এই সামান্য প্রয়াস।