বকপক্ষী ও সারমেয় ভ্রাতৃত্রয়

সৃজনশীল রচনাকর্মের পরিসরে কবিতা ও চিত্রকলা অনন্য। | এই দুই ভুবনে কবি ও চিত্রশিল্পী জামাল হােসেনের অভিনিবেশ অসাধারণ। তার এই যুগল প্রয়াস পাঠককে শিহরিত করে, করে উদ্বেল, ব্যাকুল এবং প্রাণিত। তার কবিতার ভাষা সরল।। এর শরীরে ব্যাপ্ত দুটি উপাদান : স্মৃতি ও সমকাল। স্মৃতিময় সৃষ্টিতে কবি বেছে নেন গীতল উচ্চারণ। আবার সমকাল বিম্বিত হয় ইঙ্গিতময় প্রতীকি ব্যঞ্জনায়। কিন্তু বিষয়গুলাে আমাদের অতি পরিচিত বলে তার সাথে একাত্ম হই মনের অজান্তে। আবেগ কুসুমিত হয় নিবিড় মমতায়। কবি পেশায় কূটনীতিক। তার বিকশিত অনুভবে আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিকতা নেই, আছে ভাষা ও ছন্দের নিপুণ খেলা। আছে কবিমনের উচ্চকিত আন্দোলন ও বিলােড়ন। এখানেই সফল তার কারুকৃতি। বিশেষ করে স্মৃতিময় কবিতাগুলাের নিপুণ সংযােজনে। তার স্মৃতি অজান্তে আমাদের সকলের হয়ে উঠে। কাব্যগ্রন্থের শিরােনাম : বকপক্ষী ও সারমেয় ভ্রাতৃত্রয়। বকপক্ষী। এখানে শান্তি ও প্রগতির প্রতীক। সারমেয় অশুভ শক্তির প্রতীকি নাম। তিন’ সংখ্যাটি তাৎপর্যময়। সাম্রাজ্যবাদ, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ, স্বাধীনতা বিরােধী-শক্তি-একই অশুভ সত্তার গর্ভজাত তিনটি প্রপঞ্চ। যেন তিন ভাই। মহান মুক্তিযুদ্ধের শাণিত চেতনা, দ্রোহের আগুন ঝলসানাে। প্রত্যয়, কোমল প্রেম ও প্রকৃতি, মূর্ত ও বিমূর্ত নিবেদনে জামাল হােসেনের কবিতায় ভাস্কর। দ্রোহের অনবদ্য সাহস, দেশপ্রেমের মর্মযাতনা গভীর বােধ ও বােধিতে উদ্ভাসিত তাঁর কবিতায়। নিসর্গের অন্তর্নিহিত সুউচ্চ আবেগ তাকে আচ্ছন্ন করে, মানবতার পীড়ন তাঁকে দগ্ধ করে।