ছোটদের ১০০ বছরের ১০০ গল্প

ছােটবেলায় আমরা মা-ঠাকুরমাদের মুখে নানা রকমের গল্প শুনতে শুনতে বড় হয়ে উঠেছি। কত রূপকথার গল্প, কত ভূতের গল্প, দত্যি-দানব আরও কত কী! সে সব গল্প শুনতে শুনতে আমাদের ছােটবেলায় মনের কল্পনার আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ঘুরে বেড়াত। তারপর যখন একটু বড় হলাম, পড়তে শিখলাম তখন উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী, যােগীন্দ্রনাথ সরকার, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুকুমার রায় আমাদের ছেলেবেলাটি রঙিন করে তুলেছিলেন। একসময় ছােটদের জন্য কত পত্র-পত্রিকা বের হত। সখা,সাথী, ‘মুকুল’, ‘বালক’ আরও কত কী! ঠাকুরবাড়ির ছেলেমেয়েদের পারিবারিক পত্রিকা ছিল ‘বালক’। এই পত্রিকা সম্পাদনা করতেন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পত্নী জ্ঞানদানন্দিনী দেবী। এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যার প্রথম কবিতাটি লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর লেখা। ছােটদের জন্য সেই বিখ্যাত কবিতাটি, যে কবিতা আমরা সকলেই ছােটবেলায় আদোআদোভাবে বলতাম—“বৃষ্টি পড়ে টাপুর-টুপুর নদে এলাে বান’। শিশুসাহিত্যের সম্রাট উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরীও ছােটদের জন্য একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন, যার নাম ‘সন্দেশ। এই পত্রিকাটিতে রায়বাড়ির সব বিখ্যাত মানুষেরা ছােটদের জন্য কলম ধরেছিলেন। এই পত্রিকাতেই উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী লিখেছিলেন ছােটদের কাছে খুব জনপ্রিয় গল্প ‘টুনটুনির গল্প’, ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’। সুকুমার রায় লিখেছিলেন ‘পাগলা দাশু’র গল্প যা পড়লে ছােটদের মন ভাল হয়ে যায়। এই পত্রিকাতেই লিখেছেন সুবিনয় রায়, কুলদারঞ্জন রায়, লীলা মজুমদার, সত্যজিৎ রায়-এর মতাে সব বিখ্যাত লেখকলেখিকারা। সত্যজিৎ রায় তাে একসময় এই পত্রিকা সম্পাদনাও করেছেন। সিনেমার । শতকাজে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও অতিযত্ন করে সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনা করতেন, গল্পের অলংকরণ করতেন।