Skip to Content
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক : জীবনী গ্রন্থমালা

Price:

104.00 ৳


শেফালি
শেফালি
120.00 ৳
150.00 ৳ (20% OFF)
শেষ কমরেড
শেষ কমরেড
160.00 ৳
200.00 ৳ (20% OFF)

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক : জীবনী গ্রন্থমালা

https://pathakshamabesh.com/web/image/product.template/38938/image_1920?unique=e22244d

104.00 ৳ 104.0 BDT 130.00 ৳

Not Available For Sale

(20% OFF)

This combination does not exist.

Terms and Conditions
30-day money-back guarantee
Shipping: 2-3 Business Days

 Delivery Charge (Based on Location & Book Weight)

 Inside Dhaka City: Starts from Tk. 70 (Based on book weight)

 Outside Dhaka (Anywhere in Bangladesh): Starts from Tk. 150 (Weight-wise calculation applies)

 International Delivery: Charges vary by country and book weight — will be informed after order confirmation.

 3 Days Happy ReturnChange of mind is not applicable

 Multiple Payment Methods

Credit/Debit Card, bKash, Rocket, Nagad, and Cash on Delivery also available. 

‘আরাে গরম লিখে যাও’ পরামর্শটা দিয়েছিলেন নজরুলকে। ফজলুল হক কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী। নবযুগ' পত্রিকার প্রকাশনার ব্যাপারে সাহায্য করছেন। নজরুলের আগুনঝরা লেখার কারণে পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে দিনকে দিন। ইংরেজ বিচারপতি টিউনন ফজলুল হককে ডেকে নিয়ে ব্রিটিশবিরােধী লেখার জন্য। দিলেন চোখরাঙানি হুশিয়ারি। কিন্তু সেই ব্রিটিশ সাহেব হয়তাে বােঝেননি, বাঘের সঙ্গে চোখ রাঙিয়ে লাভ নেই। বাংলার মানুষ ভালােবেসে তাঁকে ‘হক সাহেব' নামে ডাকত। অসীম সাহসিকতা, অদমনীয়তার জন্য পরিচিত ছিলেন ‘শের-ই-বাংলা’ নামে। পুরাে নাম আবুল কাসেম ফজলুল হক (১৮৭৩-১৯৬২)। বিশ শতকের প্রথমার্ধে বাঙালি কূটনীতিক হিসেবে ছিলেন বেশ জনপ্রিয়। অনেক রাজনৈতিক পদে ছিলেন কলকাতার মেয়র, অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ইত্যাদি। তাঁর ছিল বিশাল বর্ণাঢ্য জীবন। বাবা ওয়াজেদ আলী ছিলেন বরিশালের খ্যাতনামা আইনজীবী। নিজেও নিয়েছিলেন বাবার পেশা। ১৮৯৭ সালে বিএ পাস করেন। ফজলুল হক। এরপর পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা আইনজীবী স্যার আশুতােষ মুখােপাধ্যায়ের সহকারী হিসেবে ১৯০০ সালে কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর আইন পেশা শুরু। ১৯০৬ সালে নেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি। কিন্তু মতে মিলল না সরকারের সঙ্গে। দিলেন ছেড়ে চাকরিটা। আইন পেশায় আবার ফেরেন। সেটা ১৯১১ সালে। ১৯০৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনে অংশ নেন। ১৯১৩ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত ছিলেন বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য। ১৯২০ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত কাজ করেন মন্টেগু-চেমসফোর্ট কাউন্সিলের সদস্য। হিসেবে। ১৯১৬ সালে লক্ষ্ণৌ শহরে লীগ কংগ্রেসের যুক্ত অধিবেশনে তাঁর প্রস্তাবেই বিখ্যাত ‘লক্ষ্ণৌ চুক্তি’ অভিহিত হয়। ১৯১৮ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের দিল্লী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে তাঁর দেওয়া সেই ভাষণকে বলা হয় ইতিহাসের এক স্বর্ণ অধ্যায়। ১৯২৫ সালে মনােনীত হন বাংলার মন্ত্রিসভার সদস্য। ১৯২৭ সালে কৃষক-প্রজা পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৩০৩১ এবং ১৯৩১-৩২ সালে বিলেতে অনুষ্ঠিত গােলটেবিল বৈঠকে যােগদান করেন। সেখানেও তাঁর বক্তৃতা ঝড় তােলে। ১৯৩৫-৩৬ সালে কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। তিনিই ছিলেন এ পদে অধিষ্ঠিত প্রথম বাঙালি মুসলমান। ১৯৩৭ সালে অবিভক্ত বাংলার প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৪০ সালে মােহাম্মদ আলী জিন্নাহর সভাপতিত্বে লাহােরে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অধিবেশনে জ্বালাময়ী বক্তৃতায় প্রথম পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রস্তাব করেন। বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে পাঞ্জাববাসীরা উপাধি দেয় ‘শের-ই-বঙ্গাল’ অর্থাৎ বাংলার বাঘ। সে থেকে তিনি শের-ই-বাংলা নামে পরিচিত। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রিত্বকালে অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ করেন। তিনি দরিদ্র কৃষকের উপরে কর ধার্য না করে সারা বাংলায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করেন। বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ’ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগে ১৯৩৮ সালের ১৮ আগস্ট বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন সংশােধনী পাস হলে জমিদারদের লাগামহীন অত্যাচার চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৩৯ সালে মুসলমানদের জন্য শতকরা ৫০ ভাগ চাকরি নির্দিষ্ট রাখার ব্যবস্থা করেন। ওই বছর চাষী খাতক আইন’-এর সংশােধনী এনে ঋণ সালিশী বাের্ডকে শক্তিশালী করেন। কৃষি আধুনিকায়নের জন্য ঢাকা, রাজশাহী এবং খুলনার দৌলতপুরে কৃষি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। পাট চাষীদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার লক্ষ্যে ১৯৩৮ সালে পাট অধ্যাদেশ জারিকরণে তিনিই বেশি ভূমিকা পালন করেন। ব্যাপক গুরুত্ব প্রদান করেন নারীশিক্ষার প্রতি। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানের অ্যাডভােকেট জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৫৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট’ দলের নেতৃত্ব দিয়ে বিপুল ভােটে জয়ী হন। হন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এরপর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে নিযুক্ত হন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে। ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টর-অব-ল এবং ১৯৫৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান তাঁকে ‘হিলাল-ই-পাকিস্তান’ উপাধিতে ভূষিত করেন। শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক আমাদের বীরত্বের প্রতীক। সমাজ সংস্কারক এই চিরজীবী নেতার জীবনকথা লিখেছেন বর্ষীয়ান লেখক সিরাজ উদদীন আহমেদ। এই বইয়ে তিনি শের-ই-বাংলার নিরলস সংগ্রামের চিত্র সুন্দরভাবে তুলে এনেছেন। যেজীবন পাঠে আমরা উদ্দীপ্ত হব, প্রেরণা পাব এবং অনমনীয় মনােভাবের পরিচয় ভেতরে লালন করব। চিরস্মরণীয় ব্যক্তিকে নিয়ে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বলেছিলেন, ‘আমি রাজনীতি বুঝিনে। ওসব দিয়ে আমি ফজলুল হককে বিচার করিনে। আমি তাঁকে বিচার করি গােটা দেশ ও জাতির স্বার্থ দিয়ে।...বাঙালিত্ব ও সাচ্চা মুসলমানিত্বের এমন সময় আমি আর দেখিনি।' সেই বন্ধনের কথা মনে করালেই এই বই সার্থক। সবাইকে ধন্যবাদ।

Siraj Uddin Ahmed

সিরাজ উদ্দীন আহমেদ ৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভােরে বেতারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সংবাদ পেয়ে বরগুনা মহকুমার তকালীন মহকুমা প্রশাসক সিরাজ উদ্দীন আহমেদ তাৎক্ষণিক হত্যার প্রতিবাদ করেন। সামরিক সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে, তিনি বরগুনা মহকুমায় সামরিক আইন ও কাফু জারি করেননি। তার নির্দেশে বরগুনায় অবস্থানরত রক্ষীবাহিনী বিদ্রোহ করে এবং তিনি নিজে অস্ত্র হাতে জনতাকে হত্যার প্রতিবাদ জানাতে ও অবৈধ সরকারের বিরােধিতার আহবান জানান। বরগুনার মহকুমা পুলিশ অফিসার মুক্তিযােদ্ধা মােঃ ফারুক ও তার পুলিশ বাহিনী বিদ্রোহ করেন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার হত্যার প্রতিবাদে মহকুমা প্রশাসকের অফিসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। ১৬ আগস্ট তিনি তার বাসভবনে শােকসভা করেন। সামরিক সরকারের পক্ষে কোন মিছিল বরগুনাতে হয়নি। সেদিন বরগুনার জনগণ, বাকশাল নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগ তার আহবানে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করে। সামরিক সরকার তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও অন্য নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে। সিরাজ উদ্দীন আহমেদের ন্যায় বাংলাদেশে আর কোন সামরিক-বেসামররিক কর্মকর্তা বা জনগন বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করেনি। তিনি মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। অস্ত্র দিয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশােধ নিতে পারেননি। তাই তিনি বাংলাদেশের স্থপতিদের জীবনী রচনার জন্য কলম তুলে নেন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধীনতা ঘােষণা-বিজয় অতঃপর, বরিশালের ইতিহাস, বাংলাদেশ গড়লেন যারা, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা, ভারত বিভাগঐতিহাসিক ভুল, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস গ্রন্থ রচনা করেছেন।

Title

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক : জীবনী গ্রন্থমালা

Author

Siraj Uddin Ahmed

Publisher

Kathaprokash

Number of Pages

50

Language

Bengali / বাংলা

Category

  • Biography
  • First Published

    FEB 2011

    ‘আরাে গরম লিখে যাও’ পরামর্শটা দিয়েছিলেন নজরুলকে। ফজলুল হক কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী। নবযুগ' পত্রিকার প্রকাশনার ব্যাপারে সাহায্য করছেন। নজরুলের আগুনঝরা লেখার কারণে পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে দিনকে দিন। ইংরেজ বিচারপতি টিউনন ফজলুল হককে ডেকে নিয়ে ব্রিটিশবিরােধী লেখার জন্য। দিলেন চোখরাঙানি হুশিয়ারি। কিন্তু সেই ব্রিটিশ সাহেব হয়তাে বােঝেননি, বাঘের সঙ্গে চোখ রাঙিয়ে লাভ নেই। বাংলার মানুষ ভালােবেসে তাঁকে ‘হক সাহেব' নামে ডাকত। অসীম সাহসিকতা, অদমনীয়তার জন্য পরিচিত ছিলেন ‘শের-ই-বাংলা’ নামে। পুরাে নাম আবুল কাসেম ফজলুল হক (১৮৭৩-১৯৬২)। বিশ শতকের প্রথমার্ধে বাঙালি কূটনীতিক হিসেবে ছিলেন বেশ জনপ্রিয়। অনেক রাজনৈতিক পদে ছিলেন কলকাতার মেয়র, অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ইত্যাদি। তাঁর ছিল বিশাল বর্ণাঢ্য জীবন। বাবা ওয়াজেদ আলী ছিলেন বরিশালের খ্যাতনামা আইনজীবী। নিজেও নিয়েছিলেন বাবার পেশা। ১৮৯৭ সালে বিএ পাস করেন। ফজলুল হক। এরপর পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা আইনজীবী স্যার আশুতােষ মুখােপাধ্যায়ের সহকারী হিসেবে ১৯০০ সালে কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর আইন পেশা শুরু। ১৯০৬ সালে নেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি। কিন্তু মতে মিলল না সরকারের সঙ্গে। দিলেন ছেড়ে চাকরিটা। আইন পেশায় আবার ফেরেন। সেটা ১৯১১ সালে। ১৯০৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনে অংশ নেন। ১৯১৩ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত ছিলেন বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য। ১৯২০ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত কাজ করেন মন্টেগু-চেমসফোর্ট কাউন্সিলের সদস্য। হিসেবে। ১৯১৬ সালে লক্ষ্ণৌ শহরে লীগ কংগ্রেসের যুক্ত অধিবেশনে তাঁর প্রস্তাবেই বিখ্যাত ‘লক্ষ্ণৌ চুক্তি’ অভিহিত হয়। ১৯১৮ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের দিল্লী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে তাঁর দেওয়া সেই ভাষণকে বলা হয় ইতিহাসের এক স্বর্ণ অধ্যায়। ১৯২৫ সালে মনােনীত হন বাংলার মন্ত্রিসভার সদস্য। ১৯২৭ সালে কৃষক-প্রজা পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৩০৩১ এবং ১৯৩১-৩২ সালে বিলেতে অনুষ্ঠিত গােলটেবিল বৈঠকে যােগদান করেন। সেখানেও তাঁর বক্তৃতা ঝড় তােলে। ১৯৩৫-৩৬ সালে কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। তিনিই ছিলেন এ পদে অধিষ্ঠিত প্রথম বাঙালি মুসলমান। ১৯৩৭ সালে অবিভক্ত বাংলার প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৪০ সালে মােহাম্মদ আলী জিন্নাহর সভাপতিত্বে লাহােরে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অধিবেশনে জ্বালাময়ী বক্তৃতায় প্রথম পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রস্তাব করেন। বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে পাঞ্জাববাসীরা উপাধি দেয় ‘শের-ই-বঙ্গাল’ অর্থাৎ বাংলার বাঘ। সে থেকে তিনি শের-ই-বাংলা নামে পরিচিত। ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রিত্বকালে অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ করেন। তিনি দরিদ্র কৃষকের উপরে কর ধার্য না করে সারা বাংলায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করেন। বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ’ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাঁর উদ্যোগে ১৯৩৮ সালের ১৮ আগস্ট বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন সংশােধনী পাস হলে জমিদারদের লাগামহীন অত্যাচার চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৩৯ সালে মুসলমানদের জন্য শতকরা ৫০ ভাগ চাকরি নির্দিষ্ট রাখার ব্যবস্থা করেন। ওই বছর চাষী খাতক আইন’-এর সংশােধনী এনে ঋণ সালিশী বাের্ডকে শক্তিশালী করেন। কৃষি আধুনিকায়নের জন্য ঢাকা, রাজশাহী এবং খুলনার দৌলতপুরে কৃষি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। পাট চাষীদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার লক্ষ্যে ১৯৩৮ সালে পাট অধ্যাদেশ জারিকরণে তিনিই বেশি ভূমিকা পালন করেন। ব্যাপক গুরুত্ব প্রদান করেন নারীশিক্ষার প্রতি। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানের অ্যাডভােকেট জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৫৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট’ দলের নেতৃত্ব দিয়ে বিপুল ভােটে জয়ী হন। হন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এরপর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে নিযুক্ত হন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে। ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টর-অব-ল এবং ১৯৫৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান তাঁকে ‘হিলাল-ই-পাকিস্তান’ উপাধিতে ভূষিত করেন। শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক আমাদের বীরত্বের প্রতীক। সমাজ সংস্কারক এই চিরজীবী নেতার জীবনকথা লিখেছেন বর্ষীয়ান লেখক সিরাজ উদদীন আহমেদ। এই বইয়ে তিনি শের-ই-বাংলার নিরলস সংগ্রামের চিত্র সুন্দরভাবে তুলে এনেছেন। যেজীবন পাঠে আমরা উদ্দীপ্ত হব, প্রেরণা পাব এবং অনমনীয় মনােভাবের পরিচয় ভেতরে লালন করব। চিরস্মরণীয় ব্যক্তিকে নিয়ে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বলেছিলেন, ‘আমি রাজনীতি বুঝিনে। ওসব দিয়ে আমি ফজলুল হককে বিচার করিনে। আমি তাঁকে বিচার করি গােটা দেশ ও জাতির স্বার্থ দিয়ে।...বাঙালিত্ব ও সাচ্চা মুসলমানিত্বের এমন সময় আমি আর দেখিনি।' সেই বন্ধনের কথা মনে করালেই এই বই সার্থক। সবাইকে ধন্যবাদ।
    No Specifications